75Th pOsT : ভগৎ সিং সোনী ( রায়পুর) এবং তরুণ ভাটনগর

(হিন্দী থেকে বাংলা ভাষায় কবিতার অনুসৃজন)

হিন্দী সাহিত্য এবং , বিশেষ ভাবে, হিন্দী কবিতার সাথে পরিচয় থাকায় প্রায়ই মনে হতো আমরা কেবলই ইংরাজি ভাষায় ভেসে যেতে চাই বলে ইংরাজী কবিতা এবং ইংরাজি ভাষায় অনুদিত কবিতার দিকে চেয়ে থাকি, পড়ি, পন্ডিত হয়ে উঠি সেই কলেজ জীবন থেকে। এভাবেই বিশ্বের সাহিত্যের সাথে আমাদের পরিচয় হয়কবিতা কেউ কাউকে শেখাতে পারে না। মাওরি বা জাড়োয়ারাও কবিতা পায়, তাদের সাধ্য মতো প্রকাশ করে তা। ভারতেই কত ভাষা আছে আমরা জানি কি ? খোঁজ রাখি আমাদের প্রতিবেশী কবিতার ? বাক-এর এই বিভাগে আমরা আগে তেলেগু কবি চেরাবান্দা রাজু’র কবিতা্র বাংলা ভাষায় অনুসৃজন উপস্থিত করেছি। এবার হিন্দী ভাষার কবিতার প্রতি মনোযোগ দেয়া হল। ‘প্রগতিশীল লেখক সংঘ’ প্রকাশনীর পত্রিকা ‘বসুধা’ (সংখ্যা ৬৬, ২০০৬ সাল) এবং ‘সাহিত্য একাডেমি’ দ্বারা প্রকাশিত ‘সমকালীন ভারতীয় সাহিত্য’ পত্রিকা (সংখ্যা ১২২, ২০০৫ সাল) থেকে কবিতা বেছে নিয়ে অনুসৃজন করলেন বারীন ঘোষাল। লক্ষ্য রাখা হল বিখ্যাত ও পুরস্কৃত কবিদের যেন বাছাই না করা হয়। আপনারা এবার পড়ুন ----

              ভগত সিং সোনী (রায়পুর)

বাড়ি

সে খুঁজছে
              আপনা
                          ঘরের আপন, তবু

যখনই সেই সে
              বাড়িটার অদূর কোণে আসে
ঘর ফেলে বাড়ি তার পিছনে চলে যায়।

ঘর
      তো পেছনে নয় নহে
আমাদের সামনেই তার বুক ভরা
            হাওয়া পোরা পোড়ায় ফোলানো
আমাদেরই মতো মনোবুক
আর ঘর ঘর।
                           

বিলাপ

সে বাড়ি ফিরেই
আমাকে বকতে থাকে
তাকে চেহারা হারাতে দেখি আঁক দিয়ে এঁকে
অন্ধকারে কে বলল হারানো মনে হয়।

তার শিহর হরণ করছিল কেউ
তার চেহারা ফোটায় চেয়ে থাকা
সিমেন্টে বালু নাকি বালুর সিমেন্ট
রাগে বিরাগের স্ট্যাচুর নিথর

দেহ ও জিয়ার অতলে দাঁড়িয়ে
সে বলে    বলে সে-ই
মাটিতে মিলাবে আমাকে ও মাকে
মাটি আমার মা-টি ওহো
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মৌনময়।

চুপ করে শুনি
আর ভাবি
আমারই চোখেরা দেখতে থাকে
তাহার বিলাপ।

আমারই মাটিতে
আমারই আত্মায়
আমার ছায়া
আমার সাথে নড়তেই থাকে অনড়ের মতো




            
                  


                 তরুণ ভাটনগর



শব্দে আবারও শব্দ হচ্ছে

আমরা যখন কেলান্ত হয়ে যাবো
যখন পায়ের টনটন আর হাঁটতে দেবে না
শব্দেরা আলো হয়ে শব্দে

শব্দুনিয়া তৈরি দেখে শান্তি পাই
আর যে বেদনা গলগল শব্দ নিয়ে আমরা চলেছি
এরকমই অশেষ থাকবে তারা তারারাও।

শব দো-রা শরীরের জীবনের মতো নয়
ফুরিয়ে গিয়ে ছাই-ফুঁ দেবে না
সময় পেরিয়ে যায় শব্দরাও যাক না
দিশাহারা অগতিটি তোলা থাক
ক্যালেন্ডারের পাতা ওলটানোর শব্দে
মানুষ পিছড়া বোঝে পাশায়
শব্দ আবার কথা বলে
শব্দ আবার করে শব্দ হয়ে যায়।

শিগগির খুব সেদিন
শব্দশরম গায়ে দাঁড়াবে মানুষ
নগ্নে নগন্যে আর আড়াল পাবে না
খোলে তাই খুলে যায় আদিম শব্দরা।

এড়িয়ে যাবার কোন চোরাপথ নেই
শব্দরা আবার কথা বলছে
শব্দরা ফিরে শব্দ হয়ে যাচ্ছে।
                   

                                                                --------------------------------------------------